ভালবাসা ছাড়া জীবন শূন্য,তাই ভালবাসা দিয়ে জয় করতে চাই এই ভুবন।

সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৪

বিদায় বেলায়!!


পথিক! ওগো সুদূর পথের পথিক-
হায়, অমন ক’রে ও অকর”ণ গীতে আঁখির সলিলে ছেয়ো না,
ওগো আঁখির সলিলে ছেয়ো না।।
দূরের পথিক! তুমি ভাব বুঝি
তব ব্যথা কেউ বোঝে না,
তোমার ব্যথার তুমিই দরদী একাকী,
পথে ফেরে যারা পথ-হারা,
কোন গৃহবাসী তারে খোঁজে না,
বুকে ক্ষত হ’য়ে জাগে আজো সেই ব্যথা-লেখা কি?
দূর বাউলের গানে ব্যথা হানে বুঝি শুধু ধূ-ধূ মাঠে পথিকে?
এ যে মিছে অভিমান পরবাসী! দেখে ঘর-বাসীদের ক্ষতিকে!
তবে জান কি তোমার বিদায়- কথায়
কত বুক-ভাঙা গোপন ব্যথায়
আজ কতগুলি প্রাণ কাঁদিছে কোথায়-
পথিক! ওগো অভিমানী দূর পথিক!
কেহ ভালোবাসিল না ভেবে যেন আজো
মিছে ব্যথা পেয়ে যেয়ো না,
ওগো যাবে যাও, তুমি বুকে ব্যথা নিয়ে যেয়ো না।

শনিবার, ২২ মার্চ, ২০১৪

মস্তিষ্ক ও শরীরের উপর প্রেমের ৫টি বিচিত্র প্রভাব!!!


ভালোবাসার
কোনো বৈজ্ঞানিক
সংজ্ঞা কি আছে? হয়তো নেই। কিন্তু
ভালোবাসা নিয়ে বিজ্ঞানীদের
মাথাব্যথার শেষ নেই।
ভালোবাসা মানুষের
জীবনকে কী কী উপায়ে প্রভাবিত
করে, তা নিয়ে চলছে অনেক গবেষণা।
আর মানুষের মস্তিষ্কের ওপরে,
তথা শরীরের ওপরে যে প্রেমের
বিশাল প্রভাব আছে সেটা বলাই
বাহুল্য। ঠিক কীভাবে মানুষের শরীর ও
মস্তিষ্কের ওপরে প্রভাব
রাখে ভালোবাসা? প্রেমের প্রভাব
মানুষের
মস্তিষ্কে তথা শরীরে কী বিচিত্র সব
প্রভাব ফেলে তা জেনে অবাক হবেন
নিজেই!
১) হরমোনে ভেসে যায় মস্তিষ্ক
মস্তিষ্ক নিয়ে যারা গবেষণা করেন
তারা ভালবাসাকে তিন
পর্যায়ে ভাগ করেন। কামনা,
ভালোলাগা এবং আনুগত্য। কামনার
পর্যায়টা সর্বপ্রথম, এবং এতে শরীরের
ভেতরে রীতিমত হরমোনের
বন্যা বয়ে যায়। অ্যাড্রেনালিন
এবং নরপিনেফ্রিন এর
প্রভাবে হৃৎপিণ্ডের গতি বেড়ে যায়,
হাতের তালু ঘামতে থাকে। এর
পাশাপাশি ডোপামিন
তৈরি করে উচ্ছাসের অনুভূতি।
অনেকটা ড্রাগ নেবার মতোই
অনুভূতি হয় তখন।
২) পেইনকিলারের মতো কাজ করে
এই ঘটনাটা অবশ্য প্রেমে পড়ার আগেও
ঘটতে পারে। আকর্ষণীয় একটি মুখ
দেখলে এমনিতেই ব্যথা কমে যায়।
মস্তিষ্কের যে অংশে মরফিনের
মতো পেইনকিলারগুলো কাজ করে,
ঠিক সেই অংশেই এই অনুভূতিটিও
কার্যকর হয়, ফলে শরীরের
ব্যথা কমে যায়। আর ভালোবাসার
মানুষটির প্রতি যেহেতু আকর্ষণ
বেশি থাকে, তাই তার প্রভাবেই
শরীরের ব্যথা কমে যায় অনেকখানি।
৩) মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল অনেক
বেশি হয়
মস্তিষ্কের “প্লেজার সেন্টার” বা সুখ-
কেন্দ্রের মাঝে প্রচুর পরিমাণে রক্ত
সরবরাহ হয় প্রেমে পড়লে। আর এই
ঘটনাটি সাধারণত ঘটে প্রেমের
দ্বিতীয় পর্যায় “ভালোলাগা” তে,
যখন দুইজন একে অপরের সাথে সম্পর্ক
দীর্ঘ করার কথা ভাবতে শুরু করেন।
৪) মস্তিষ্কে “ও সি ডি” লক্ষণ
তৈরি করে
“ওসি ডি” বা অবসেসিভ কম্পালসিভ
ডিজঅর্ডার হলো এমন একটি অবস্থা যখন
মানুষ কোনো কিছু করার
প্রতি একগুঁয়ে হয়ে পড়েন।
প্রেমে পড়লেও এমনটা হয়,
যে কারণে প্রেমাসক্ত মানুষটি তার
সঙ্গীর মাঝে কোনো খুঁত দেখতে পান
না, সব দোষ ক্ষমা করে দেন। প্রেমের
প্রথম পর্যায়ে এমনটা হয়, যখন সঙ্গীর সব
কাজই ভাল লাগতে শুরু করে।
৫) হরমোন
তৈরি করে দীর্ঘমেয়াদি অনুরাগ
বেশ কিছুদিন
ধরে কাউকে ভালোবাসার পর
মানুষের মাঝে তৈরি হয় আনুগত্য
এবং নির্ভরশীলতার অনুভূতি। তখন
মস্তিষ্ক আগের মতো উচ্ছ্বাস অনুভব
করে না বটে, কিন্তু
মস্তিষ্কে অক্সিটোসিন আর
ভ্যাসোপ্রেসিন নামের দুই হরমোন
নিঃসৃত হবার ফলে মস্তিষ্কে তৈরি হয়
নিরাপত্তা এবং স্থিতির অনুভূতি।
ফলে মানুষ ওই সঙ্গীর সাথেই
জীবনে স্থায়ী হতে চায়।

শুক্রবার, ২১ মার্চ, ২০১৪

ভালবাসা মানে কি?

ভালবাসা মানে কি ?
গভীর সুমুদ্রে মিশে যাওয়া আকাশ
কে দেখা ,
নাকি , একেঅপরের চোখে নিহিত
ভালবাসা কে দেখা ?
ভালবাসা মানে কি ?
লিখতে পড়তে শুধু তার ই
কথা মনে করা .
নাকি , বইয়ের পাতায় শুধু তার
ছবি ভেসে উঠছে মনে করা ?
ভালবাসা মানে কি ?
সমস্ত কাজকে ভুলে যাওয়া ,
নাকি , প্রতিটা মুহুর্তে শুধু তাকেই
মনের মাঝে খুঁজে পাওয়া ?
ভালবাসা মানে কি ?
সময়ের মুল্য দেওয়া .
নাকি ,
তাকে নিয়ে ভাবতে ভাবতে মূল্যবান
সময় কে নষ্ট হতে দেয়া ?
ভালবাসা মানে কি ?
নিজের সমস্ত
ইচ্ছা কে দমিয়ে দেওয়া .
নাকি , তার সমস্ত ইচ্ছা কে গুরত্ব
দেওয়া ?
ভালবাসা মানে কি ?
মিথ্যা কথার খনি আগলা করা ,
নাকি ,
মিথ্থা কথা কে রং চড়িয়ে সত্যি করা
?
ভালবাসা মানে কি ?
অন্ধকার
রাস্তা ধরে পাসাপাসি হেটে চলা ,
নাকি , যা পাওয়া হয়নি এখনো ,তার
জন্য প্রতিক্ষা করে চলা ?
ভালবাসা মানে কি ?
রঙিন প্রজাপ্রতি কে ইচ্ছামত
কাছে পাওয়া .
নাকি , অধরা অন্য কারোর
দিকে বারে বারে ছুটে যাওয়া ?
ভালবাসা মানে কি ?
মনের
কোনো অজানা তৃষ্ণাকে মেটানো ,
নাকি , দুটি ঠোটের
স্পর্শে তৃষ্ণা কে মেটানো ?
ভালবাসা মানে কি ?
কল্পনার আনন্দে ভেসে থাকা ,
নাকি , শরীরের স্পর্স
আনন্দে মেতে থাকা ?
ভালবাসা মানে কি ?
দুটি শরীর এক হওয়ার টান ,
নাকি , প্রেম নিছক ই মনের দুরন্ত টান ?
ভালবাসা মানে কি ?
পৃথিবীর কিছু অদেখাকে দেখার
আসা ,
নাকি , শুধু ই মনের ও চোখের নেশা??

স্বাধীনতা

প্রকাশ্য রাস্তায় যদি তারস্বরে চাঁদ, ফুল, পাখি
এমনকি নারী ইত্যাকার শব্দাবলী
করি উচ্চারণ, কেউ করবে না বারণ কখনো।
কিন্তু কিছু শব্দকে করেছে
বেআইনী ওরা
ভয়ানক বিস্ফোরক ভেবে।
স্বাধীনতা নামক শব্দটি
ভরাট গলায় দীপ্ত উচ্চারণ করে বারবার
তৃপ্তি পেতে চাই। শহরের আনাচে কানাচে
প্রতিটি রাস্তায়
অলিতে-গলিতে,
রঙিন সাইনবোর্ড, প্রত্যেক বাড়িতে
স্বাধীনতা নামক শব্দটি আমি লিখে দিতে চাই
বিশাল অক্ষরে।
স্বাধীনতা শব্দ এত প্রিয় যে আমার
কখনো জানিনি আগে। উঁচিয়ে বন্দুক,
স্বাধীনতা, বাংলাদেশ- এই মতো শব্দ থেকে ওরা
আমাকে বিচ্ছিন্ন করে রাখছে সর্বদা।
অথচ জানেনা ওরা কেউ
গাছের পাতায়, ফুটপাতে
পাখির পালকে কিংবা নারীর দু’চোখে
পথের ধুলায়
বস্তির দুরন্ত ছেলেটার
হাতের মুঠোয়
সর্বদাই দেখি জ্বলে স্বাধীনতা নামক শব্দটি।
২১ জুলাই ১৯৭১, কবিতাটা ভারতীয় ‘দেশ’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় ছদ্মনামে। মজলুম আদিব, যার অর্থ নির্যাতিত কবি।

ইতিহাস!

পুন্ড্রবর্ধনের রাজধানী পুন্ড্রনগর (বর্তমান
মহাস্থান) এবং অপর শহর কোটিবর্ষ
(বর্তমান বানগড়)এর
মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত ছিল
সোমপুর মহাবিহার। এর
ধ্বংসাবশেষটি বর্তমান
বাংলাদেশের বৃহত্তর রাজশাহীর
অন্তর্গত নওগাঁ জেলার
বাদলগাছি উপজেলার পাহাড়পুর
গ্রামে অবস্থিত। অপর দিকে জয়পুরহাট
জেলার জামালগঞ্জ রেলস্টেশন
থেকে এর দূরত্ব পশ্চিমদিকে মাত্র ৫
কিমি। এর ভৌগলিক অবস্থান ২৫°০´ উত্তর
থেকে ২৫°১৫´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫০
´ পূর্ব থেকে ৮৯°১০´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ
পর্যন্ত।
গ্রামের মধ্যে প্রায় ০.১০ বর্গ
কিলোমিটার (১০ হেক্টর) অঞ্চল
জুড়ে এই পুরাকীর্তিটি অবস্থিত।
প্রত্নতাত্ত্বিক এই নিদর্শনটির
ভূমি পরিকল্পনা চতুর্ভূজ আকৃতির।
এটি বাংলাদেশের উত্তরবঙ্গের
প্লাবন সমভূমিতে অবস্থিত,
প্লাইস্টোসীন যুগের বরেন্দ্র নামক অনুচ্চ
এলাকার অন্তর্ভুক্ত। মাটিতে লৌহজাত
পদার্থের উপস্থিতির
কারণে মাটি লালচে। অবশ্য
বর্তমানে এ মাটি অধিকাংশ
স্থানে পললের নিচে ঢাকা পড়েছে।
পার্শ্ববর্তী সমতল ভূমি থেকে প্রায়
৩০.৩০ মিটার উচুতে অবস্থিত পাহাড়
সদৃশ
স্থাপনা হিসেবে এটি টিকে রয়েছে।
স্থানীয় লোকজন একে ‘গোপাল
চিতার পাহাড়’ আখ্যায়িত করত। সেই
থেকেই এর নাম হয়েছে পাহাড়পুর,
যদিও এর প্রকৃত নাম সোমপুর বিহার।
বৌদ্ধ বিহারটির ভূমি-
পরিকল্পনা চতুষ্কোনাকার। উত্তর ও
দক্ষিণ বাহুদ্বয় প্রতিটি ২৭৩.৭
মি এবং পূর্ব ও পশ্চিম বাহুদ্বয় ২৭৪.১৫ মি।
এর চারদিক চওড়া সীমানা দেয়াল
দিয়ে ঘেরা ছিল। সীমানা দেয়াল
বরাবর অভ্যন্তর ভাগে সারিবদ্ধ ছোট
ছোট কক্ষ ছিল। উত্তর দিকের
বাহুতে ৪৫টি এবং অন্য তিন দিকের
বাহুতে রয়েছে ৪৪টি করে কক্ষ। এই
কক্ষগুলোর তিনটি মেঝে আবিষ্কৃত
হয়েছে।
প্রতিটি মেঝে বিছানো ইঁটের ওপর পুরু
সুরকী দিয়ে অত্যন্ত মজবুত
ভাবে তৈরি করা হয়েছিলো। সর্বশেষ
যুগে ৯২টি কক্ষে মেঝের ওপর বিভিন্ন
আকারের বেদী নির্মাণ করা হয়। এ
থেকে অনুমান করা যায় যে, প্রথম
যুগে সবগুলো কক্ষই ভিক্ষুদের আবাসকক্ষ
হিসেবে ব্যবহৃত হলেও
পরবর্তীকালে কিছু কক্ষ
প্রার্থনাকক্ষে রুপান্তর
করা হয়েছিলো।
কক্ষগুলোর প্রতিটিতে দরজা আছে। এই
দরজাগুলো ভেতরের দিকে প্রশস্ত কিন্তু
বাইরের দিকে সরু হয়ে গেছে। কোন
কোন কক্ষে কুলুঙ্গি পাওয়া যায়।
কুলুঙ্গি সম্বলিত কক্ষগুলোর
মেঝেতে দৈনন্দিন ব্যবহারযোগ্য বেশ
কিছু দ্রব্যাদি পাওয়া যায়। ভেতরের
দিকে কক্ষগুলোর দৈর্ঘ্য ৪.২৬
মি এবং প্রস্থ ৪.১১ মি। কক্ষের পেছনের
দিকের দেয়াল অর্থাৎ
সীমানা দেয়াল ৪.৮৭মি এবং সামনের
দেয়াল ২.৪৪মি চওড়া। কক্ষগুলোর
সামনে ২.৫মি প্রশস্ত
টানা বারান্দা আছে। ভেতরের
দিকের উন্মুক্ত চত্বরের
সাথে প্রতিটি বাহু সিঁড়ি দিয়ে যুক্ত।
বিহারের উত্তর বাহুর মাঝ বরাবর
রয়েছে প্রধান ফটক। এর বাইরের ও
ভেতরের দিকে একটি করে স্তম্ভ
সম্বলিত হলঘর এবং পাশে ছোট ছোট
কুঠুরি আছে। এই কুঠুরিগুলো বিভিন্ন
উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হত। প্রধান ফটক
এবং বিহারের উত্তর-পূর্ব কোনের
মাঝামাঝি অবস্থানে আরও
একটি ছোট প্রবেশ পথ ছিলো। এখান
থেকে ভেতরের উন্মুক্ত
চত্বরে প্রবেশের জন্য যে সিঁড়ি ব্যবহৃত
হত তা আজও বিদ্যমান। উত্তর, দক্ষিণ ও
পশ্চিম বাহুতেও অনুরুপ সিঁড়ির
ব্যবস্থা ছিলো। এদের মাঝে কেবল
পশ্চিম বাহুর সিঁড়ির চিহ্ন আছে। উত্তর
বাহুর প্রবেশ পথের সামনে ১৯৮৪ সাল
পর্যন্ত একটি পুকুর ছিল। ১৯৮৪-৮৫ সালের
খননে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রথম নির্মাণ
যুগের পরবর্তী আমলে এ পুকুর খনন করা হয়
এবং এসময় এ অংশের সিঁড়িটি ধ্বংস
করে দেয়া হয়।
পরবর্তীকালে পুকুরটি ভরাট
করে দেয়া হয়।
বিহারের অন্তর্বর্তী স্থানের উন্মুক্ত
চত্বরের
মধ্যবর্তী স্থানে রয়েছে কেন্দ্রীয়
মন্দিরের ধ্বংশাবশেষ। এখন
এটি ২১মি উঁচু হলেও মূল
মন্দিরটি কমপক্ষে ৩০ মি উঁচু ছিল।
তিনটি ক্রমহ্রাসমান
ধাপে ঊর্ধ্বগামী এ মন্দিরের ভূমি-
পরিকল্পনা ক্রুশাকার।
প্রতিটি ক্রুশবাহুর দৈর্ঘ্য-প্রস্থ ১০৮.৩
মি ও ৯৫.৪৫মি। কুশের
মধ্যবর্তী স্থানে আরও
কয়েকটি অতিরিক্ত দেয়াল
কৌণিকভাবে যুক্ত। মূল পরিকল্পনাটির
কেন্দ্রে দরজা-জানালা বিহীন
একটি শূন্যগর্ভ চতুষ্কোণাকার প্রকোষ্ঠ
আছে। এই প্রকোষ্ঠটি মন্দিরের তলদেশ
থেকে চূড়া পর্যন্ত বিস্তৃত। মূলতঃ এ
শূন্যগর্ভ প্রকোষ্ঠটিকে কেন্দ্র করেই
সুবিশাল এ মন্দিরের
কাঠামো নির্মিত। এ কক্ষের
চারদিকে মন্দিরের দ্বিতীয়
ধাপে চারটি কক্ষ ও মন্ডপ নির্মাণ
করা হয়েছে। এর ফলেই
মন্দিরটি ক্রুশাকার ধারণ করেছে।
মন্দির পরিকল্পনার
সমান্তরালে দেয়াল পরিবেষ্টিত
প্রদক্ষিণ পথ আছে। অনুরুপভাবে প্রথম
ধাপে দ্বিতীয় ধাপের প্রদক্ষিণ পথের
দেয়ালের চারদিকে চারটি কক্ষ যুক্ত
করে ক্রুশাকৃতি বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ণ
রাখা হয়েছে এবং এর
সমান্তরালে প্রদক্ষিণ পথ নির্মাণ
করা হয়েছে। প্রথম ধাপের
সমান্তরালে মন্দিরের ভিত্তিভূমির
পূর্ব, পশ্চিম ও দক্ষিণ দিকে দেয়াল
তৈরি করা হয়েছে। উত্তর দিকের
মধ্যবর্তীস্থলে সিঁড়ি ছিল।
পরবর্তিতে এ সিঁড়ি ধ্বংস করে তার
উপর কিছু নতুন কাঠামো নির্মাণ
করা হয়।
কেন্দ্রীয় শূন্যগর্ভ কক্ষে একটি ইঁট
বাধানো মেঝে আবিষ্কৃত হয়েছে। এ
মেঝে কক্ষের বাইরে চারদিকের কক্ষ ও
মন্ডপের প্রায় একই সমতলে অবস্তথিত।
কিন্তু চারদিকের
কক্ষগুলো থেকে কেন্দ্রীয় এ
কক্ষে যাওয়ার কোন পথ বা দরজা নেই
এবং আগে ছিলো,পরে বন্ধ
করা হয়েছে এমন কোন প্রমাণও
পাওয়া যায় না। কক্ষে মূর্তি রাখার
বেদী বা কুলুঙ্গী কিছুই নেই। তাই
অনুমিত হয় ফাঁপা এ দন্ডটি মন্দিরের
সুউচ্চ দেয়ালগুলোর সুদৃঢ় নির্মানের জন্য
একটি উপকরণ ছিল। মূর্তিগুলো সম্ভবত এর
চারদিকের কক্ষগুলোতে স্থাপন
করা হয়েছিলো। মন্দিরের শীর্ষদেশের
কোন নিদর্শন নেই বিধায় এর ছাদ
সম্বন্ধে সুস্পষ্ট কিছু বলা যায় না।
কেন্দ্রীয় শূন্যগর্ভ কক্ষটির দেয়াল
নিরাভরণ কিন্তু প্রতিটি ধাপের
দেয়ালগুলোর বহির্ভাগ উদগত কার্নিশ,
অলংকৃত ইঁট এবং সারিবদ্ধ পোড়ামাটির
ফলকচিত্র দ্বারা সজ্জিত। ক্রুশাকার
পরিকল্পনার বর্ধিত অংশগুলোর
সংযোগস্থলে কার্নিশের প্রান্ত পর্যন্ত
পানি নিষ্কাশন নালার ব্যবস্থা আছে।
পাথর নির্মিত এ নালাগুলোর মুখ
গর্জনরত সিংহের মুখের
অবয়বে নির্মিত। ভিত্তিভূমির
দেয়ালের
বহির্দেশে ৬৩টি কুলুঙ্গি আছে। এর
প্রতিটিতে একটি করে পাথরের
ভাস্কর্য ছিলো।
বিহারের মধ্যবর্তী উন্মুক্ত অঙ্গনে আরও
কিছু ইমারতের ধ্বংসাবশেষ
পাওয়া যায়। এদের মাঝে বেশ কিছু
ইমারতের বৈশিষ্ট্য সনাক্ত করা সম্ভব
হয়নি। অঙ্গনের দক্ষিণ-
পূর্বাংশে ভোজনশালা ও
রন্ধনশালা অবস্থিত। এ দুটি স্থাপনার
মাঝে ৪৬মি দীর্ঘ ইট
বাঁধানো একটি নর্দমা আছে এবং এর
কাছে এক সারিতে তিনটি কূপ আছে।
এছাড়াও রয়েছে কিছু নিবেদন স্তূপ,
প্রশাসনিক ভবন, কেন্দ্রীয় মন্দিরের
প্রতিকৃতি ইত্যাদি। নিবেদন স্তূপগুলোর
মাঝে দক্ষিণ-পূর্বাংশে অবস্থিত
স্তূপটি ১৬কোণ বিশিষ্ট নক্ষত্র আকৃতির।
অনুচ্চ একটি মঞ্চের মাঝে সংস্থাপিত
এ স্তূপটির সংলগ্ন
স্থানে রয়েছে একটি পাকা কূপ।
অন্যান্য নিবেদন
স্তূপগুলো বিক্ষিপ্তভাবে নির্মিত।
চত্বরের উত্তর-পূর্বাংশের
ইমারতগুলো সম্ভবত প্রশাসনিক
এবং অন্যান্য কাজে ব্যবহৃত হত।
তথ্যের জন্য উইকিপিডিয়ার
কাছে কৃতজ্ঞতা রইলো।

আমি অগান্তুক নই!!!

আসমানের তারা সাক্ষী
সাক্ষী এই জমিনের ফুল, এই
নিশিরাইত বাঁশবাগান বিস্তর জোনাকি সাক্ষী
সাক্ষী এই জারুল জামরুল, সাক্ষী
পূবের পুকুর, তার ঝাকড়া ডুমুরের পালেস্থিরদৃষ্টি
মাছরাঙা আমাকে চেনে
আমি কোনো অভ্যাগত নই
খোদার কসম আমি ভিনদেশী পথিক নই
আমি কোনো আগন্তুক নই
আমি কোনো আগন্তুক নই, আমি
ছিলাম এখানে, আমি স্বাপ্নিক নিয়মে
এখানেই থাকি আর
এখানে থাকার নাম সর্বত্রই থাকা -
সারা দেশে।
আমি কোনো আগন্তুক নই। এই
খর রৌদ্র জলজ বাতাস মেঘ ক্লান্ত বিকেলের
পাখিরা আমাকে চেনে
তারা জানে আমি কোনো অনাত্মীয় নই।
কার্তিকের ধানের মঞ্জরী সাক্ষী
সাক্ষী তার চিরোল পাতার
টলমল শিশির, সাক্ষী জ্যোৎস্নার চাদরে ঢাকা
নিশিন্দার ছায়া
অকাল বার্ধক্যে নত কদম আলী
তার ক্লান্ত চোখের আঁধার
আমি চিনি, আমি তার চিরচেনা স্বজন একজন। আমি
জমিলার মা’র
শূন্য খা খা রান্নাঘর শুকনো থালা সব চিনি
সে আমাকে চেনে
হাত রাখো বৈঠায় লাঙ্গলে, দেখো
আমার হাতের স্পর্শ লেগে আছে কেমন গভীর। দেখো
মাটিতে আমার গন্ধ, আমার শরীরে
লেগে আছে এই স্নিগ্ধ মাটির সুবাস।
আমাকে বিশ্বাস করো, আমি কোনো আগন্তুক নই।
দু’পাশে ধানের ক্ষেত
সরু পথ
সামনে ধু ধু নদীর কিনার
আমার অস্তিত্বে গাঁথা। আমি এই উধাও নদীর
মুগ্ধ এক অবোধ বালক।

বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ, ২০১৪

প্রাণের ভাষা!

বাংলা আমার মাতৃভাষা
কান্না-হাসি মনের আশা,
মজুর-শ্রমিক মাঝি চাষা
আমার প্রানের বাংলা ভাষা।
হাসতে পারি বলতে পারি
গাইতে পারি গান,
রক্তে কেনা বাংলা ভাষা
আল্লাহ তা’লার দান।

চিকিৎসা!!

হার্ট অ্যাটাকের আধুনিক চিকিৎসা প্রাইমারি পিসিআই
Health Info

চিরতরে চলে গেছেন চিত্রনায়ক মান্না। আর কখনোই তিনি প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হয়ে পর্দা কাঁপাবেন না। মান্নার আকস্মিক মৃত্যুর পর সর্বত্র একই আলোচনা। মান্নাকে কি বাঁচানো সম্ভব ছিল? মান্না তো বুকে ব্যথার সঙ্গে সঙ্গেই হাসপাতালে গিয়েছিলেন তবে কেন এই পরিণতি? মান্না কি আগে থেকেই হৃদরোগে ভুগছিলেন? বিদেশে পাঠালে কি মান্না বেঁচে যেতেন? এরকম অসংখ্য প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছি প্রতিনিয়ত। একজন কার্ডিওলজিষ্ট হিসেবে রোগীদের এসব প্রশ্নের মুখোমুখি হয় একটি বিষয় নিশ্চিত যে, মান্না তার অসংখ্য ভক্তকে কাঁদিয়ে যেমন চলে গেছেন, তেমনি হৃদরোগের আকস্মিক মৃত্যু নিয়ে ভাবিয়ে তুলেছেন তার ভক্তদের। কেউ কেউ ইউনাইটেড হাসপাতালে মান্নার ভুল চিকিৎসা হয়েছে-একথা বলতেও দ্বিধা করছেন না। পত্রিকায় দেখলাম, মান্নার পরিবার এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক অভিযোগের প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু আসলেই কি ভুল চিকিৎসা হয়েছিল? নাকি মারাত্মক এ হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী ছিল? হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর মৃত্যুর আগপর্যন্ত চিত্রনায়ক মান্নার চারবার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়েছিল। মান্না বুকে ব্যথা নিয়ে গাড়ি চালিয়ে ভোর ৫টা ৫৫ মিনিটে হাসপাতালে পৌঁছলে ইসিজি ও আনুষঙ্গিক পরীক্ষার পর হার্ট অ্যাটাক শনাক্ত করা হয়। জরুরি বিভাগ থেকে তখন তাকে সিসিইউতে স্হানান্তর করা হয়। প্রাইমারি পিসিআই (একই সঙ্গে করোনারি অ্যাঞ্জিওগ্রাম ও অ্যাঞ্জিওপ্লাষ্টি) করার জন্য প্রথমে মান্নার কাছে এবং পরে মান্নার ভাইয়ের কাছে সম্মতি চাওয়া হয়। সম্মতি না পেয়ে হার্টের জমাটবাঁধা রক্ত তরল করার জন্য ইনজেকশনের (ষ্ট্রেপটোকাইনেজ) মাধ্যমে থ্রোম্বোলাইজ করা হলেও তাতে কাজ হয়নি। আবারো পিসিআই করার সম্মতি চাওয়া হয় স্বজনদের কাছে। সম্মতি দেয়া হয়নি তখনো। এ অবস্হায় ১০টা ৩০ মিনিটে হঠাৎ হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। সিপিআর ও ডিসি শকের মাধ্যমে মান্নার নিঃশ্বাস স্বাভাবিক করা হয়। কিন্তু কয়েক মিনিট পর দ্বিতীয়বার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। মেকানিক্যাল ভেন্টিলেটর লাগানোর পর পিসিআই করার সম্মতি চান চিকিৎসকরা আবারো। এ অবস্হায় মান্নাকে বাঁচানোর তীব্র আকাঙ্ক্ষায় বেলা ১১টায় সম্মতি দেয়া হলে টেমপোরারি পেসমেকার লাগানোর পর করোনারি অ্যাঞ্জিওগ্রাম করা হয়। অ্যাঞ্জিওগ্রামে প্রধান ৩টি ধমনীতে ৩টি ব্লক শনাক্ত করে রিং (Stent) বসানো হয়। তৃতীয়বার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়। ২০ মিনিট পর চতুর্থবার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হলে ২টা ২৮ মিনিটে মান্নার মৃত্যু ঘটে। মান্নার যে ধরনের হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল, এই হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় প্রাইমারি পিসিআই আদর্শ এবং আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি। উন্নত বিশ্বে যা অত্যন্ত জনপ্রিয় চিকিৎসা পদ্ধতি। তবে বাংলাদেশসহ উপমহাদেশে এ চিকিৎসা পদ্ধতি এখনো ততটা সফলতা পায়নি। করোনারি ধমনীতে শতকরা একশ’ ভাগ ব্লক হলেই কেবল হার্ট অ্যাটাক হয়; তাই যত দ্রুত সম্ভব reperfusion করা উচিত। কেননা বলা হয় Time is muscle অর্থাৎ প্রাইমারি পিসিআই হার্টের মাসল ঘবপৎড়ংরং রক্ষা করা। তবে Medical Contact to balloon ev door-to-balloon time নব্বই মিনিটের মধ্যে হতে হবে। অর্থাৎ রোগী যদি দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছতে পারে, সেই হাসপাতালে যদি প্রাইমারি পিসিআই করার সেটআপ থাকে, যদি দক্ষ ইন্টারভেনশন কার্ডিওলজিষ্ট থাকে তবেই প্রাইমারি পিসিআই করা হয়।

আমাদের দেশে এ চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে এখনো সচেতনা সৃষ্টি হয়নি। আমাদের দেশে এ চিকিৎসা পদ্ধতি হাতে গোনা কয়েকটি হাসপাতালে সম্ভব হচ্ছে; কারণ এ বিষয়ে দক্ষ ইন্টারভেনশন কার্ডিওলজিষ্টের সংখ্যা খুবই কম। আবার যেখানে কার্ডিওলজিষ্ট আছে, সেখানে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বা Technical Support নেই।
এ চিকিৎসা পদ্ধতিকে জনপ্রিয় করে তুলতে হলে প্রয়োজন সচেতনতা সৃষ্টি করা এবং রোগীদের মাঝে আস্হা অর্জন।

এ আস্হা অর্জন শতকরা একশ’ ভাগ এখনো আমরা করতে পারিনি। তাই মান্নার কাছে সম্মতি চাওয়া হলে তিনি দেননি।

আমাদের দেশে হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসায় বেশিরভাগ হাসপাতালে ষ্ট্রেপটোকাইনেজ দিয়ে থ্রোম্বোলাইজ করা হয়। এ ইনজেকশনের মাধ্যমেই বেশিরভাগ রোগী সুস্হ হয়ে ওঠেন। প্রাইমারি পিসিআই’র মতো উপকার পাওয়া না গেলেও রোগীর মৃত্যুঝুঁকি কমে যায়। তবে এ ইনজেকশনও গোল্ডেন টাইমের মধ্যে দিতে হবে। দেরি করলে এ ইনজেকশনের সুফল থেকে বঞ্চিত হবেন রোগী। তাই বুকে ব্যথার পর বা হার্ট অ্যাটাকের পর দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে এবং চিকিৎসকদেরও দ্রুত চিকিৎসা শুরু করতে হবে।

পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও ভালো ট্রাসপোট ফ্যাসিলিটি না থাকলে বা door-to-balloon  নব্বই মিনিটের বেশি হলে থ্রোম্বোলাইজ করা হয়। তবে ষ্ট্রেপটোকাইনেজের পরিবর্তে এখন আরো ভালো ইনজেকশন/ওষুধ অন্যান্য দেশে ব্যবহৃত হচ্ছে।

থ্রোম্বোলাইজ করার জন্য ষ্ট্রেপটোকাইনেজ দিলে অনেক সময়ই কার্যকর হয় না অর্থাৎ ধমনীর জমাট রক্ত তরল হয় না। মান্নার ক্ষেত্রেও থ্রোম্বোলাইজ ব্যর্থ হয়েছিল।

ষ্ট্রেপটোকাইনেজ দেয়ার পর ক্লিনিক্যালি রোগীর উন্নতি না হলে কখনো কখনো Rescue PCI করা হয়। এ বিষয়ে বিশ্বব্যাপী এখনো বিভিন্ন ট্রায়াল চলছে। কোনো কোনো ট্রায়ালে বলা হয়েছে, রেসকিউ পিসিআই হার্ট অ্যাটাক-পরবর্তী মৃত্যু রোধ করে এবং হার্ট ফেইল্যুর প্রতিরোধ করে। আবার কোনো কোনো ট্রায়ালে বলা হয়েছে, রেসকিউ পিসিআই করলে ষ্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি।

বাংলাদেশ গত কয়েক বছরে কার্ডিয়াক চিকিৎসায় উন্নতির ধারাবাহিকতায় কয়েক যুগ পার করেছে। বেশিদিনের কথা নয়, যখন করোনারি এনজিওগ্রামের জন্য রোগীরা দেশের বাইরে চলে যেতেন। অথচ এখন সরকারি হাসপাতাল ছাড়াও প্রাইভেট সেক্টরগুলো হৃদরোগ চিকিৎসায় যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে। দেশের চিকিৎসা ব্যবস্হার প্রতি আস্হা শতভাগ উন্নীত করতে হবে। সিঙ্গাপুর অত্যন্ত ছোট একটি দেশ। সিঙ্গাপুরের মানুষ সে দেশে সরকারি হাসপাতালেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাই চিকিৎসক, রোগী এবং চিকিৎসা ব্যবস্হায় সরকারের ভুমিকা জোরদার হওয়া উচিত।

হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসা বিষয়ে, বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও সরকারি তত্ত্বাবধানে, একটি জরুরি চিকিৎসা ব্যবস্হা গাইড লাইন থাকা দরকার। যেমন জাপানে হার্ট-অ্যাটাকের চিকিৎসায় কি ধরনের ওষুধ ব্যবহার হবে কিংবা Primary PCI তে কী ধরনের Stent বা রিং ব্যবহার হবে তার একটি গাইড লাইন আছে।

বেসরকারি হাসপাতালগুলো বেশির ভাগই ঢাকা কেন্দ্রিক তাই বিকেন্দ্রীকরণ প্রয়োজন। আরেকটি বিষয় চিকিৎসা সেবা বা খরচের ব্যাপারে সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকা উচিত। প্রয়োজনে এমন টেকনোলজি উদ্ভাবন প্রয়োজন যার উপকরণ ও তৈরি আমাদের দেশেই সম্ভব।
হৃদরোগ চিকিৎসার (Stenting) ব্যয় সহনীয় পর্যায়ে রাখতে বা সাধারণ রোগীদের দিতে না পারলে রোগী এবং চিকিৎসকের মধ্যে কখনোই আস্হার বন্ধুত্ব হবে না। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বা সরকারের বিস্তৃত ভাবনা প্রয়োজন। শুধু চিকিৎসা বিষয়ক যন্ত্রপাতি আমদানিতে সরকারের উদার হওয়া উচিত বলেই ক্ষান্ত হওয়া উচিত নয়।

বুকে ব্যথা হার্ট অ্যাটাকের একটি বিপজ্জনক সংকেত বা উপসর্গ। তবে ডায়াবেটিক রোগীরা সবসময় বুকে ব্যথা অনুভব নাও করতে পারেন। এটি আরো মারাত্মক। অনেকে হৃদরোগের ব্যথাকে গ্যাষ্ট্রিকের ব্যথা ভেবে চিকিৎসকের শরণাপণ্ন না হয়ে নিজে নিজেই এন্টাসিড জাতীয় ওধুষ খেতে থাকেন। চিকিৎসকের স্পর্শ পেতে এই বিলম্ব কখনো কখনো হার্ট অ্যাটাকের মৃত্যুঝুঁকি বাড়ায়। মনে রাখবেন বুকে ব্যথা হলে, শরীরে ঘাম হলে, বমি বমি লাগলে বা বমি হলে, কালক্ষেপণ করবেন না। হাসপাতালের ইমার্জেসিতে বা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপণ্ন হবেন। বিলম্বে মৃত্যুর ঝুকি বেশি। কারণ গবেষণার দেখা গেছে, হার্টঅ্যাটাকে শতকরা ২৫ জন এক ঘণ্টার মধ্যে মারা যায়। বাকি রোগীদের শতকরা ১৫ জন হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যায়। হার্টঅ্যাটাকের উপসর্গ হলে অ্যাসপিরিন ৩০০ মি. গ্রাম এবং ক্লোপিডোগ্রেল ৩০০ মিগ্রা (৭৫ গ্রামের ৪টি বড়ি) এক সঙ্গে খেতে হবে। এছাড়া বুকে চাপ বা ভার ভার অনুভুত হলে, রক্তচাপ থাকলে নাইট্রোমিন্ট স্প্রে (২ চাপ) জিহ্বার নিচে দেবেন। হার্টঅ্যাটাকে আক্রান্ত রোগী সময়মত হাসপাতালে পৌঁছলে ওষুধের চিকিৎসার পাশাপাশি প্রাইমারি পিসিআই করা হয়। হার্টঅ্যাটাকের ঝুঁকিকে এখন আর বয়সের ফ্রেমে বাঁধা যায় না। তবু চল্লিশের উপরে প্রত্যেক পুরুষ এবং মহিলার জানা প্রয়োজন কোনো ঝুঁকিতে আপনি আছেন কিনা। যেমন- ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তের চর্বির পরিমাণ বা লিপিড প্রোফাইল ইত্যাদি। এছাড়া ধুমপান, তামাক, শারীরিক স্হুলতা, পারিবারিক হৃদরোগের ইতিহাস ইত্যাদি জেনে সতর্ক হওয়া উচিত। কেননা হার্টঅ্যাটাকের চিকিৎসার চেয়ে হার্টঅ্যাটাক প্রতিরোধই উত্তম।
*************************
ডা. এস এম মোস্তফা জামান
লেখকঃ সহকারী অধ্যাপক, হৃদরোগ বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ফেলো -ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজি ম্যাক্স হার্ট এন্ড ভাসকুলার ইনষ্টিটিউড, নিউ দিল্লী, ইন্ডিয়া। চেম্বারঃ ল্যাবএইড লিমিটেড
বাড়ি-১, রোড-৪, ধানমন্ডি, ঢাকা।
আমার দেশ, ১৫ মার্চ ২০০৮